অধ্যায় – রূপার সাহসী সিদ্ধান্ত
দিন যত গড়াচ্ছিল, ততই রূপার পরিবারের চাপ বাড়ছিল। বাবা-মা মনে করলেন, এখনই বিয়ে দিয়ে দিলে মেয়েকে “সুরক্ষিত” রাখা যাবে। গ্রামের আত্মীয়স্বজনও বারবার এসে বলছিল—
— “মেয়েদের পড়াশোনা এত দূর পর্যন্ত করিয়ে কী লাভ? বিয়ের পর তো সংসারই করতে হবে।”
রূপা বাইরে থেকে চুপচাপ থাকত, কিন্তু ভেতরে আগুন জ্বলছিল। সে জানত, একবার যদি হ্যাঁ বলে দেয়, তবে তার স্বপ্ন ভেঙে যাবে, আর অরিন্দমকে সে হারিয়ে ফেলবে।
এক রাতে ডাইনিং টেবিলে সবাই বসেছিল। বাবা বললেন—
— “আগামী মাসেই বিয়ের দিন ঠিক করব। আর দেরি করা ঠিক হবে না।”
রূপা গলা শুকিয়ে গেলেও সাহস জোগাড় করে বলল—
— “বাবা, আমি বিয়ে করব না। এখন নয়।”
পুরো ঘরে নীরবতা নেমে এল। মা হতবাক হয়ে বললেন—
— “তুই কি আমাদের লজ্জায় ফেলতে চাইছিস?”
রূপা এবার শক্ত স্বরে বলল—
— “না মা। আমি শুধু আমার ভবিষ্যৎটা বাঁচাতে চাই। আমি পড়াশোনা শেষ করব, চাকরি করব। তারপর নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেব।”
বাবা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলেন—
— “এত জেদী মেয়ে কখনো দেখিনি! কে তোকে এসব শিখিয়েছে?”
রূপা চোখ নামিয়ে শান্ত গলায় বলল—
— “আমার বই-খাতা শিখিয়েছে। আমার স্বপ্ন শিখিয়েছে।”
মুহূর্তেই বাবার মুখ লাল হয়ে গেল। কিন্তু মেয়ের দৃঢ় চোখের দৃষ্টি দেখে তিনি চুপ করে গেলেন।
সেই রাতেই রূপা ডায়েরিতে লিখল—
"আমি ভেঙে পড়ব না। আমি ভয় পাব না। আমি আমার স্বপ্নের পথে হাঁটব। ভালোবাসা সত্য হলে, একদিন আমি আর অরিন্দম আবার একসাথে হবো।"
✨ এই অধ্যায়ে রূপার অভ্যন্তরীণ শক্তি আর সাহসী অবস্থান দেখানো হলো। তার এই সিদ্ধান্তই পরবর্তীতে তাদের ভালোবাসার জয় নিশ্চিত করে। more...
No comments: