°
চারদিক থেকে ফজরের আজানের শব্দ ভেসে আসছে।
সারারাত এ জ্ঞান ছিল না তার, নিলিমা আস্তে আস্তে উঠে বসে। আর সারা শরীরে ব্য*থা একটা মানুষ কি করে, এমন ভাবে অন্য আরেকটা মানুষকে জা*নোয়ারের মতন মা*রতে পারে। নিলিমা আবার ভাবলো তার মতো মানুষরা পারে, সে তো মানুষ মানুষরূপী জা*নোয়ার , তার তার কাছে ভালো কিছু আশা করাই বেমানান। নিলিমার আর ওই পা*ষাণ মানুষ টাকে নিয়ে আর ভাবলো না। সে উঠে আস্তে আস্তে করে ওয়াশরুমের দিকে গেল, কোন মতে ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসে। শরীর টা এখনো অনেক টা দূর্বল লাগছে, তাই বিছানায় একটু শুয়ে পরে, কখন যে ঘুমিয়ে পরেছে নিজে ও জানে না। হঠৎ ঠান্ডা হাতের স্পর্শে ঘুম ভেঙ্গে যায়, তাকিয়ে দেখে আদনান শাহরিয়ার মা শারমিন শাহরিয়া, নিলিমা কিছু বলতে নিবে, তাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে, শারমিন শাহরিয়া বলে...
শারমিন শাহরিয়া: উঁহু কিছু বলতে হবে না, আমি জানি তুই কোনো ভুল করতেই পারিস না।
পিছনের থেকে আরিফ শাহরিয়া বলে উঠে...
আরিফ শাহরিয়া : মামনি আমরা জানি তুমি কোনো ভুল করনি। তাই আমাকে বা তোমার বড় আম্মু কে কোনো কিছুর ব্যা*খ্যা দিতে হবে না। [ নিলিমাকে বসতে সাহায্যে করতে করতে। তার মাথায় হাত দিয়ে বলে ] মামনি তুমি তো জানোই ও ( আদনান শাহরিয়া) কেমন , ছোট থেকেই ও অনেক জে*দি, একবার যেটা ভাবে সেটাই করে। আর আমার ছেলেটা ছেলেটা যে কি করে, এমন কাজের সাথে জরিয়ে পড়লো [ বলেই নিরবে চোখের পানি মুছে ফেললেন যেনো কেউ দেখতে না পায়। কিন্তু তার চোখের পানি ঘরের মধ্যে থাকা দুইটা মানুষ ই দেখেছে সে যতোই লুকানোর চেষ্টা করেন না কেনো,
সব কিছু সামলাতে শারমিন শাহরিয়া বলে..
শারমিন শাহরিয়া: আচ্ছা আচ্ছা এখন এ-সব বাদ দেও তো তোমরা ( নিলিমার মাথায় হাত দিয়ে বলে) উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে আয় । আর আজকে আর কলেজে যেতে হবে না। আর এইযে ( আরিফ শাহরিয়ার দিকে তাকিয়ে) তুমি ও ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো, অফিস যেতে হবে কিনা। [ বলেই বেরিয়ে যায়, নিচে গিয়ে তার রান্না দেখতে হবে ] শারমিন নিচে সবার জন্য সবার সবার পছন্দের রান্না তৈরি করে সবাইকে ডাকতে থাকে। জয়েন্ট ফ্যামিলি থাকে আরিফ শাহরিয়া, তার ছোট ভাই আতিক শাহরিয়া, তার বউ জেসমিন শাহরিয়া আর তাদের দুই ছেলে মেয়ে, ছেলে আসিফ শাহরিয়া, মেয়ে আনিতা শাহরিয়া আর আদনান শাহরিয়া আর তাদের আশ্রিতা নিলিমা ( নিলিমা শারমিন শাহরিয়ার ছোট বেলার বান্ধুবির মেয়ে, নিলিমার মা বাবা মা*রা যাওয়ার পরে, নিলিমার নানাবাড়ির না দাদাবাড়ীর কেউই তাকে নিতে, সবাই অস্বীকার করে দেয় তার দায়িত্ব নিতে। তখন একমাত্র শারমিন শাহরিয়া নিলিমাকে নিয়ে আসে, তার পর থেকেই নিলিমা এই বাড়িতে) নিলিমাকে বাড়ির সবাই ভালোবাসে শুরু আদনান শাহরিয়া ছাড়া।
সবাই এক এক করে এসে খাবার টেবিলে বসে একমাত্র আদনান শাহরিয়া ছাড়া।
আনিতা ( আতিক শাহরিয়ার মেয়ে) : কিরে নিলি এখন কেমন লাগছে, শরীর কেমন তোর ( নিলিমার সাথে তার অনেক ভালো সম্পর্ক, নিলিমাকে নিজের বোনের মতো ভালোবাসে আনিতা, আর আনিতা নিলিমার দুই বছর এর বড়, আর তার ভাই আসিফ শাহরিয়া আনিতা থেকে পাঁচ বছর এর বড়, পড়ালেখার পাট শেষ করে, তার বড় আব্বু আর আব্বুর সাথে তাদের ফ্যামিলি বিজনেস এ জয়েন করেছে কয়েকদিন আগে।
নিলিমা : আপু এখন আগের থেকে ভালো, খেয়ে একটা ওষুধ খেয়ে নিবো, দেখবে আমি একবারে ফিট এন্ড ফাইন হয়ে যাবো। ( একটা চঞ্চল হাসি দিয়ে)
আমার খাওয়া শেষ বড় আম্মু( বলেই চলে যায় তার রুমে, শাহরিয়া বাড়িটা বিশাল বড় তিন তোলা একটা বাড়ি, তাদের বাড়ির সামনে খালি জায়গায় দুইপাশে খুব সুন্দর করে ফুলের বাগান, নানান রং এর ফুল গাছ দিয়ে বাগানটা খুব যত্ন করে সাজিয়ে রাখে। তার ঘরটা বাড়ির দু’তালায়, দু’তালার প্রথম ঘরটা আনিতার আর লাস্ট এর ঘরটা নিলিমার, মাঝখানের ঘরটা এ বাড়ির সবচেয়ে বড় ঘর, আদনান শাহরিয়ার ঘরে কেউ প্রবেশ করে না তাই তার ঘরটা কেমন তা কেউ জানে না। তার ঘরে তার মা প্রবেশ করে তাও শুধু গুছিয়ে দেওয়ার জন্য এ ছাড়া প্রবেশ নি*ষিদ্ধ। নিলিমা ঘরে আসে বসে। তার ঘরটা সাধারন এর মধ্যে অসাধারণ একটা ঘর, খুব বেশি জিনিস নেই, একটা খাট ড্রেসিং টেবিল পড়ার টেবিল আর ওয়ারড্রব এ দিয়েই খুব সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা।
দেখতে দেখতে একদিন কে*টে গেছে। এর মধ্যে আর ওই পা*ষাণ মানুষটার সাথে দেখা হয় নাই, বাড়িতেই নাকি আসে নাই। আজ থেকে সে কলেজে যাবে, এখন আগের থেকে অনেকটা সুস্থ। সকালে ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে, রেডি হতে গেছে তখনই পিছন থেকে একটা গম্ভীর কন্ঠ ভেসে আসে..
More...
No comments: