Header Ads Widget

test

প্রেমে_প্রেমে_ভালোবেসেছি



 প্রেমে_প্রেমে_ভালোবেসেছি

পর্ব_০৮
লেখিকা_তাই
(রিচেক দেয়া হয়নি)
আয়রা কলেজ ফাঁকি দিয়ে হাসপাতালে এসেছে।এখন হাসপাতালে
রিদ্মিক এর কাছে শুধু আকাশ আছে।কাল রিদ্মিক এর এক্সিডেন্ট নিয়ে সবাই যেমন বলছিলো, ততটাও মারাত্মক ছিলো না।তবে বেশ ভালোই আঘাত পেয়েছে।সবার মুখে শুনে মনে হয়েছিলো এই বুঝি
রিদ্মিক ভাইয়ের কিছু একটা হয়ে যাবে।পরে হাসপাতালে এসে আকাশের থেকে জানতে পেরেছে মারাত্মক এক্সিডেন্ট না,তবে মোটামুটি ভালোই আঘাত পেয়েছে। আঁজলাম চৌধুরি আসায় আয়রা বাড়ি ফিরে গিয়েছিলো।ডক্টর তো বলেছে রিদ্মিক বিপদমুক্ত। তখন আজলাম চৌধুরি রিদ্মিক এর সাথে থাকায় আয়রা আর দেখা করতে পারেনি। এছাড়াও তার কেমন জানি লাগছে, রিদ্মিক ভাইয়ের এই অবস্থার জন্য তো একমাত্র সে ই দায়ী।।কেমন হাসফাস লাগছে।সালাম সাহেবের সাথেই বাড়ি ফিরেছে তাই ।তবে বাড়ি ফিরেও শান্তি পাচ্ছিলো না। অস্থিরতা কমাতে শেষে আকাশের নম্বর খুঁজে তাকে ফোন করে। রিদ্মিক ভাইয়ের খবর জানতে চাইলে আকাশ তাকে জানিয়েছিলো,রিদ্মিক সেন্স ফিরে পাওয়ার পর পাগলামি করছিলো। কি কি জানি বির বির করে বলছিলো। সেজন্য ঘুমের ইনজেকশন দিতে হয়েছে। কারণ রিদ্মিক এর সেন্স আসলেই সে কেমন জানি করছে। আয় পারলে সেই রাত্রিবেলাই ছুটে আসতো। রিদ্মিক ভাইয়ের এমন অবস্থা শুনে শান্তিতে থাকা যায় বুঝি?হাসফাস লাগছিলো তার প্রচুর।তাই এক কলেজ ফাঁকি দিয়ে আকাশের সাথে যোগাযোগ করে হাসপাতালে এসেছে সে।কি করবে জানে না।তবে এবার যা মন চাইবে তাই করবে সে।এতে ,যা খুশি হয়ে যাক।আকাশ হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলো। আয়রাকে দেখে নিজেই এগিয়ে আসে।
~ একা আসতে কোনো সমস্যা হয়নিতো?
~ না
আয়রার গলা ভাঙা।আকাশ অবাক হয়।
~ তোমার গলার স্বর এমন লাগছে কিন?গলা ভাঙলো কিভাবে?
আয়রা ইতস্তত হয়।গলা যে কিভাবে ভাঙছে সেটা কি বলা যায়!এটা কাল সারারাত মানসিক পিড়া নিতে না পেরে কান্নার ফল যে।এখন আর প্রশ্নের উত্তর দিতেও মন চাচ্ছে নাহ্।কখন রিদ্মিক ভাইয়ের কাছে যাবে,একনজর দেখতে পারবে... এজন্য মনটা শুধু ছটফট করছে।
~ এমনি এমনি ভেঙে গিয়েছে ভাইয়া।আমরা যাই?
আকাশ থতমত খায়।এমনি এমনি ও গলা ভাঙে!তবে আয়রার অস্থিরতা খেয়াল করে আর কিছু বলে না।
রিদ্মিকের ঘুম ভেঙেছে খানিক আগে। কিছুক্ষণ থম মেরে বসে থেকে বোঝার চেষ্টা করে সে কোথায় আছে এখন।ঘুমের রেশ কেটে যেতে যেতে একে এক গতকালের সবকিছু মনে পরে যায়।মনটা খুব বাজে ভাবে বিষিয়ে ওঠে।চোখের সামনে যেনো ভাসছে, আয়রাকে শুভ জড়িয়ে ধরেছে ।তার পাখি তাকে এভাবে শাস্তি দিচ্ছে।রিদ্মিক তো মানছে সে ভুল করেছে, অন্যায় করেছ।তার সাজা এভাবে পেতে হবে? আয়রা কি বুঝে না রিদ্মিক তাকে কতটা ভালোবাসে?কতটা চায়?
এসবই বিরবির করছে ক্রমাগত।মাথার ভিতর আবার কিছু একটা হচ্ছে।অস্থির লাগছে । আপনমনে বুকের বাম দিকটায় ডলছে বারেবার।চোখে ইতিমধ্যে পানি এসে পরেছে।মাথার চুল খামচে ধরছে।আর এসব দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থ হয়ে আয়রা দেখছে।
রিদ্মিক এর বির বির করে বলা প্রত্যেকটা কথা সে বুঝেছে। তার জন্য যে রিদ্মিক ভাই কষ্ট পাচ্ছে সেটা বোধহয় প্রথম বারের মতো ভালো করে উপলব্ধি করলো । রিদ্মিক ভাই তাকে ভালোবাসতে পারে, তাও এতোটা সেটা বুঝে আসলো। ন্যানো সেকেন্ডেই সে নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়।ছুটে গিয়ে ধরাম করে রিদ্মিক এর বুকে ঝাপিয়ে পরে। হঠাৎ,এমন অনাকাক্ষিত কিছুর জন্য কেউই প্রস্তুত ছিলো না।রিদ্মিক এর বুকে কেউ এসে ঝাপিয়ে পরলে প্রথমে থতমত খেয়ে সরিয়ে দিতে চায় । পরবর্তীতে এটা আয়রা বুঝতে পেরে তার হৃদস্পন্দন থেমে যায়।বিষয়টা তার কাছে অবিশ্বাস্য। আয়রার ফুঁপিয়ে কান্না করার শব্দে যেনো হুস আসে তার।চোখ থেকে এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লে দ্রুত হাতে টি মুছে নেয়। চুপচাপ আয়রাকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে।
~আমাকে..কিছু বলার সুযোগ দিলেন না।আপনি..আপনি নিজের মতো ভেবে এতো রিয়েক্ট করলেন।এক্সিডেন্ট করলেন।শুধু আমার উপর বিশ্বাসটাই করতে পারলেন না রিক ভাই?
রিদ্মিক নিঃশব্দে শুনে আয়রার অভিযোগ।
~ শুভ আমাকে প্রোপোজ করেছিলো।আমি না করেছিলাম,ও শুধু আবেগ প্রবণ হয়ে জড়িয়ে ধরেছিলো।আমি নিজেই চড় মারতে গেছিলাম।তার আগেই আপনি আসলেন,এরপর কত কি করলেন!
এ পর্যায়ে রিদ্মিক মুখ খুলে,কোনমতে ফিসফিস করে বলে,
~ ভেবেছিলাম আমাকে শাস্তি দিতে তুমি ওই ছেলেকে ভালোবেসেছো।
~ আমি...আপনাকে ভালোবাসি রিক ভাই...শুধু ...আপনাকে।
রিদ্মিক থম মেরে বসে থাকে।সে কি ভুল শুনছে?নাকি...নাকি ঠিক?নিশ্চিত হতে কাপা কাপা বুক নিয়ে বলে,
~ আবার একটু বলবে more.....
আয়রা লজ্জা পায়।রিদ্মিক এর বুকে ঘাপটি মেরে থেকে মিন মিন স্বরে বলে,
~ আমি আপনাকে ভালোবাসি। আপনাকে ভালোবাসি..শুধু রিক ভাইকে।
রিদ্মিক প্রশান্তির হাসা হাসে।জীবন সার্থক তার,তার এতদিনের চেষ্টায় সে সফল।তার প্রাণ তাকে ভালোবাসে।শুধু তাকে ভালোবাসে।এমনকি এখন তার বুকের মাঝেই আছে।তার প্রাণ।তার নিজস্ব প্রাণ।তার জান...
~ আহাম,আহাম....
আকাশ এসে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে গোলা খাঁকারি দেয়।এতে আয়রার অবশ্য খেয়াল আসে সে এতক্ষণ কি করেছে।তবে আর লুকাতে চায় না কিছু।এবার থেকে সে মনের কথাই শুনবে।
~ তাহলে? আয়রাকে এবার থেকে ভাবী ডাকতে হবে এইতো?
আকাশ মজা করে বলে। সে মূলত রিদ্মিক এর জন্য খাবার নিয়ে আসতে গেছিল তখনই।এদেরকে একটু একাও ছেড়ে দিলো আরকি।আর এসে এভাবে দেখেই সবটা বুঝে গেলো। আয়রা আকাশের কথায় লজ্জা পেলেও বিরোধিতা করলো না।রিদ্মিক এর এসব খেয়াল নাই।সে আয়রাকে দেখছে।চোখে মুখে তার একরাশ উজ্জ্বলতা।আকাশ সবটাই দেখে।তাই বন্ধুর খুশি আরো একটু বাড়িয়ে দিতে আয়রাকে বলে,
~ এখন তুমিই তোমার প্রেমিক কে খাইয়ে দাও আয়রা। সে তো হাত পা ভেঙে বসে আছে।
আয়রা হাসে।খুশি মনে নিজেই গিয়ে আকাশের হাত থেকে খাবার নিয়ে নেয় । প্লেটে নিয়ে রিদ্মিক এর বেডে পা উঠিয়ে বসে। ছোটো ছোটো হাতে বিরিয়ানি তুলে নিয়ে রিদ্মিক এর মুখের সামনে ধরে।
রিদ্মিক শুধু অবাক হয়ে আয়রার চঞ্চলতা দেখে।এ যেনো এক অন্য আয়রা! এমন আয়রাকে সে এই প্রথম দেখছে হয়তো।
-----------------------------------
মাঝখানে কেটে গিয়েছে দু সপ্তাহ। আয়রা আর রিদ্মিক ভাইয়ের
প্রেম তো জমে ক্ষীর। খুনসুটি,মান অভিমান,যত্ন,ভালোবাসা..সব কিছু মিলিয়ে ভালোই আছে তারা। তবে এই সম্পর্কের কথা আকাশ বাদে আর কেউ জানে নাহ।রিদ্মিক নিজেকে পুরোপুরি পরিবর্তন করে ফেলেছে। এই রিদ্মিক শুধু আয়রাকেই বোঝে।আগে থেকেই তো আয়রার জন্য পাগল ছিলো,এখন আর মারাত্মক ভাবে আয়রার প্রতি অবসেসড সে।পুরোপুরি আয়রাতে আসক্ত সে। আয়রাকে যাতে সারাক্ষণ দেখতে পারে সেজন্য এখন প্রতিদিন বাড়িতেও থাকে । আয়রা ও রিদ্মিকের এসব পাগলামি বুঝে।তাই সব সময় বারান্দায় এসে বসে থাকে। সে নিজেও রিদ্মিকের উপর অনেকটা আসক্ত হয়ে পরেছে। রিদ্মিককে ছাড়া নিজেকে ভাবতে পারছে না।মাঝে মাঝে ভয় এসে মনে হানা দেয়।রিদ্মিক কে হারিয়ে ফেলবে নাতো!
আয়রা আজ শাড়ি পরেছে।আকাশী রঙের একটা শাড়ি।সাথে চুড়ি আর কানে ঝুমকা তো আছেই । হুট করেই মনে শখ জাগলো শাড়ি পরবে,আর পরেও ফেললো। এখন রিদ্মিক ভাইকে দেখাতে হবে।যাওয়ার আগে চোখে গাঢ় করে কাজল দিয়ে নেয়।এরপর চৌধুরি বাড়ির দিকে যায় ।
রিদ্মিক সোফায় উল্টো হয়ে শুয়ে ফোনে কিছু করছে। পা দুটো সোফার উপরের দিকে,আর মাথা সোফার বাইরে নিচু করে উল্টো হয়ে শোয়া।পরনে একটা থ্রি কোয়াটার প্যান্ট, আর একটা সাদা টি শার্ট। এর মাঝেই আয়রা এসে ঢুকে রুমে । রিদ্মিক তাকিয়ে এভাবে আয়রাকে দেখে থমকে যায় এবং সোফা থেকে রীতিমতো উল্টে পরে যায় । আয়রা থতমত খেয়ে তাকিয়ে থাকে। রিদ্মিক নিজেকে সামলে নিয়ে হেসে ফেলে । আয়রা তাকে মুখ ভেঙিয়ে বেলকুনিতে গিয়ে দাঁড়ায়। রিদ্মিক মাথা চুলকে হেসে আয়রার পিছন পিছন যায়। আয়রার পিছনে গিয়ে আয়রার দুপাশে হাত রাখে রেলিং । তবে আয়রার থেকে দুরত্ব রেখেছে।
~ পরি লাগছে..
আয়রা মুখ ভেঙ্গায়।
~ ঢং..
রিদ্মিক আয়রার কানের কাছে মুখ নামিয়ে নেয়।যার ফলে তার গরম শ্বাস আয়রার ঘাড়ে পরে। আয়রা কেঁপে ওঠে খানিকটা।
~ আজকে ...একটা কিস করতে দিবা পাখি?
আয়রা থমকে যায় ।
~ একটাই পাখি,একটু আদর করি?কথা দিচ্ছি,বিয়ের আগে আর ছুবো না।শুধু আজ...
আয়রার গলা শুকিয়ে কাঠ।কাপা কাপা হাতে শাড়ি খামচে ধরে
রিদ্মিক এর বুকে পিঠ এলিয়ে দেয়। তৎক্ষণাৎ রিদ্মিক তার কোমর ঝাপটে ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়। আয়রা না পেরে চোখ বন্ধ করে নেয়। রিদ্মিক এক হাত আয়রার কোমরে রেখে নিজের সাথে আরো মিশিয়ে নেয় আয়রাকে । অন্য হাত আলতো ভাবে আয়রার গেলে রেখে দেরি না করে আয়রার নরম ওষ্ঠ নিজের শুস্ক ঠোঁটের ভাঁজে নিয়ে নেয়।
চলবে more....

No comments:

720

Powered by Blogger.