Header Ads Widget

test

সহধর্মিনী_সিজন_2



 সহধর্মিনী_সিজন_2

পর্ব_২
সাজিয়া_ইসলাম_সাথী
__এইভাবে তাকিয়ে আছিস কেন? ওকে চিনতে পারিসনি? ও হচ্ছে তোর বউ হৃদি।
"মায়ের কথায় রিয়াদ সংকুচিত চোখে তাকায়। যা ভেবেছিল ঠিক, এই মেয়ে সুবিধার না। কেমন নি*র্লজ্জের মত তাকিয়ে আছে। গলা খাঁকারি দিয়ে বলে উঠলো..
__বুঝেছি আম্মু, তোমরা সবাই কেমন আছো? বলেই মায়াকে ছেড়ে তুলিকে জড়িয়ে ধরে। এক এক করে সবার সাথে কুশল বিনিময় করে নেয়। অন্যদিকে হৃদি মুখ ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাকে একটু ভালো মন্দের কথাও জিজ্ঞেস করেনি। নিজ থেকে বলে উঠলো..
__রিয়াদ ভাইয়া আপনি কেমন আছেন? আর এতো দেরি করলেন কেন? চাইলে তো আরো অনেক আগে আসতে পারতেন।
"রিয়াদ বিরক্তির চোখে তাকায়। ইচ্ছা করলো মুখের উপর বলতে—
তোর জন্য আসেনি আমি, তোর মুখটা আমি দেখতে চাইনি তাই। কিন্তু মনের কথা মুখে আনতে পারেনি। বাড়ির বড়োরা সবাই আছে। মনে মনে শপথ করে নেয়।
__আমি যতদিন আছি বিডিতে, যতদিন আমি ওকে খুঁজে না পাই, ততদিন আমি তোর জীবন বরবাদ করে দিবো। খুব শখ ছিল না আমাকে বিয়ে করার? শখ আমি মিটিয়ে দিবো। বলেই একটা বাকা হেসে সোফায় বসে পড়লো। তার মধ্যে উপর থেকে নেমে আসলো এক চঞ্চল কিশোরী। যাকে দেখে রিয়াদ এক লাফে সোফা থেকে উঠে যায়। পরনে গেঞ্জি সেট, চুল এলোমেলো, চোখে মুখে এখনো ঘুমের চাপ। তার পিছু পিছু আর একজন আসছে। দুইজনে দৌড়াচ্ছে যেন কম্পিটিশন করেছে, কে আগে আসবে।
__ভাইয়া প্লিজ ফার্স্ট আমাকে এসে জড়িয়ে ধরো। আমার আগে যেন এই বা*দর তোমাকে ছোঁতে না পারে। বলতে বলতে দৌড়ে এসে রিয়াদকে জড়িয়ে ধরে।
__উফফ ভাইয়া কেমন আছো? জানো কত মিস করেছি তোমাকে? আমাদের কথা তো তোমার মনেই পড়ে না?
"রিয়াদ একবার তাকালো অভিমানে মুখ ফুলিয়ে রাখা বোনের দিকে। তার পিছনে মুখ লটকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সায়ান। রিয়াদ আর একহাত এগিয়ে দেয়। রিয়াদের হাত এগিয়ে দিতে দেরি, হৃদির জড়িয়ে ধরতে দেরি নেই।
"সবাই হা করে তাকিয়ে আছে হৃদির এমন কাজে। সবাই জানে হৃদি একটু চঞ্চল, একটু না অনেক বেশি চঞ্চল। কিন্তু সবার সামনে এমন করে বসবে কেউ জানত না। রিয়াদ চোখ মুখ কুঁচকে দাঁড়িয়ে থাকলো। সরিয়ে দেওয়ারও চান্স নেই। কেমন জোঁকের মত চেপে ধরেছে।
"অন্যদিকে হৃদি আর নীরা একজন একজনকে চোখ টিপ দেয়। তাদের প্ল্যান সফল। সায়ান সব কিছু লক্ষ্য করে। ওর চোখ এড়িয়ে যেতে পারে না।
__সরবি তোরা ভাইয়াকে, কি একা একা তোরা জড়িয়ে ধরবি? আমি ধরবো না? বলেই হৃদি আর নীরাকে সরিয়ে নিজে জড়িয়ে ধরে। রিয়াদ যেন বাঁচলো, শান্তির একটা নিশ্বাস নিল। মনে মনে সায়ানকে থ্যাংক্স দিলো।
__ভাইয়া কেমন আছো?
__আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তোরা তো আমাকে বলার সুযোগ দিচ্ছিস না! একজনের পর একজন টর্নেডোর মত এসে ঝাপিয়ে পড়ছিস আর একের পর এক প্রশ্ন জুড়ে দিছিস। ভাই আমি বলার সুযোগ পাচ্ছি না।
"রিয়াদের কথায় সবাই হেসে দিলো। ছেলের অবস্থা খারাপ বুঝতে পেরে, মায়া এগিয়ে আসলো।
__আরে ছাড় আমার ছেলেকে। অনেক ক্লান্ত দেখাচ্ছে, বসুক একটু।
বলেই কিচেনে যেতে গেলেই দেখে তুলি অলরেডি ঠাণ্ডা পানি দিয়ে লেবুর শরবত বানিয়ে নিয়ে আসছে। মায়া আর গেলো না, ছেলের পাশে বসে চুলে হাত বুলিয়ে দেয়।
__রিয়াদ বাবা এটা খেয়ানে, ভালো লাগবে।
ফুঁপিয়ে কথায় রিয়াদ গ্লাসটা নিয়ে এক নিশ্বাসে সব শেষ করে ফেলে।
__বাহ বাহ, এখন দেখি সব আদর রিয়াদ ভাইয়ের জন্য। আমি আর নীরাকে তো মনে হয় রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছো।
__এতদিনে এটা বুঝলি? আমি তো আগে থেকে জানতাম তোদের রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনেছে।
"সায়ানের কথায় হৃদি কপালে হাত দিয়ে বলে উঠে..
__হায় হায়! না জানি কোন রাজা বাদশার মেয়ে ছিলাম।
"রিয়াদ চোরা চোখে তাকায়। মনে মনে বলে—
__এতো দেখি এক নম্বরের কার্টুন।
__সায়ান, আমার সুটকেসটা দে তো।
"রিয়াদের কথায় সায়ান সুটকেস এগিয়ে দেয়। সুটকেস খুলে একটা রোলেক্সের ঘড়ি নিয়ে সায়ানের দিকে এগিয়ে দেয়। একটা আইফোন সিক্সটিন প্রো ম্যাক্স নিয়ে নীরার দিকে এগিয়ে দেয়।
"এইসব কিছু দেখে আবিরের অতীতের কিছু বিষাক্ত স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠে। কিন্তু আবির সে বিষাক্ত স্মৃতি মনে করতে চায় না। চোখ খিচে একটা জোরে নিশ্বাস নেয়।
"রিয়াদ সবার জন্য কিছু না কিছু নিয়ে এসেছে। যার যার গিফট থাকে থাকে দিয়ে দেয়। একমাত্র হৃদির জন্য কিছু নিয়ে আসেনি। এইসব কিছু মায়া খেয়াল করে, বুঝে যায় তার ছেলে এখনো রেগে আছে।
__রিয়াদ, হৃদির জন্য কিছু নিয়ে আসোনি?
"মায়ের কথায় রিয়াদ ভ্রু কুঁচকে তাকায়। তার হৃদির কথা মনেই ছিলো না। থাকলেও কখনো নিয়ে আসতো কিনা সন্দেহ। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে কিছু একটা নিয়ে আসলে ভালো হতো। সবাই কেমন বাকা চোখে তাকিয়ে আছে। অন্যদিকে হৃদি কেঁদে দিবে দিবে এমন একটা ভাব। রিয়াদ একবার তাকিয়ে সুটকেস থেকে এক জোড়া পায়েল বাহির করে, যেটা সে তার প্রিয়সীর জন্য নিয়ে ছিলো। সবার প্রশ্ন থেকে বাঁচার জন্য বাধ্য হয়ে সে গুলো হৃদিকে দিয়ে দিলো।
__এইনে, এটা তোর জন্য।
"হৃদি কপ করে পায়েল গুলো ছিনিয়ে নিলো, তার খুশি দেখে কে! কিন্তু সে কি জানে এই পায়েল তার জন্য ছিলো না, অন্য কারো জন্য ছিলো। সেটা জানলে কি হৃদি এতো খুশি হতে পারতো?
__আম্মু, আমাকে রুম দেখিয়ে দাও। কোন রুমে থাকবো আমি? আমার রুমটা কি আমার আছে নাকি অন্য কাউকে দিয়ে দিয়েছো?
__অন্য কাউকে কেন দিবো? তোর রুমের উপর যার অধিকার সে থাকে, তোর রুমে।
__মানে?
"রিয়াদ কিছু বুঝতে পারে না মায়ের কথা। তার রুমে আবার কার অধিকার আছে থাকার? ছেলের কথায় মায়া বুঝে গেলো, সে হৃদির সাথে এক রুমে থাকবে না। কিন্তু মায়াও কি কম? এই দুইটাকে সে সংসার করিয়ে ছাড়বে। বুঝলো ছেলের সাথে কড়া হতে হবে। কণ্ঠে একটু রাগ মিশিয়ে দৃঢ়ভাবে বলে উঠলো।
__মানে এটাই যে তোমার রুমে হৃদি থাকে। সে তোমার স্ত্রী সেটা ভুলে গেলে তো হবে না। ওর সম্পূর্ণ অধিকার আছে তোমার রুমে থাকার। আজ থেকে তুমি ও সেইখানে থাকবে।
__কিন্তু আম্মু—
__আমি এই নিয়ে কিছু শুনতে চাই না।
"মায়ের কথায় রিয়াদ বুঝে গেলো, তার কিছু করার নেই। শেষ পর্যন্ত এই কার্টুনটার সাথে রুম শেয়ার করে থাকতে হবে। হৃদির দিকে এক ভ*য়ঙ্কর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে সুটকেস নিয়ে উপরে চলে যায়। পিছু পিছু নীরা, হৃদি, সায়ানও যায়। যেন ওরা প্ল্যান করেছে, রিয়াদকে একটু শান্তিতে থাকতে দিবে না। more....

All 
2

No comments:

720

Powered by Blogger.